
নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ ২ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১১ ঘটিকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে বিটিসিএলে ৫ম প্রকল্পে অনিয়ম ও প্রকল্প এ বাতিল এর দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। যে সি ব্যান্ড ইকুইপমেন্ট দিয়ে ডিডাব্লিউডিএম কিনতে যাচ্ছে বিটিসিএল তা বিটিসিএল ক্রয় করেছে ২০১৬ সালে। আর তখন বিবেচনায় ছিল থ্রী জি।
বর্তমানে ৫জি বিবেচনায় নিয়ে কোনভাবেই সি ব্যান্ড কিনতে পারে না। সি ব্যান্ড এর ডিডাব্লিউডিএম নেটওয়ার্ক বর্তমানে বিটিসিএলে থাকতে আরেকটা সেইম টেরনোলজির ডিডাব্লিউডিএম কেনা শুধুই সরকারের আর্থিক অপচয়।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলার জন্য চাই দ্রুতগতির ৫জি। যেই প্রকল্প জনগণের অর্থে করা হচ্ছে সেই প্রকল্প দিয়ে যদি ৫জি না চলে তাহলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।
প্রকল্পের সার্বিক ত্রুটির দিক তুলে তিনি আরো বলেন, বিটিসিএল জানুয়ারি ২০২২ হতে ডিসেম্বর ২০২৪ মেয়াদে সমগ্র দেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও এখনও ভেন্ডর নিয়োগ দিতে পারেনি প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলার চেষ্টা করছেন যে, বুয়েট এর সমীক্ষা রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করে তিনি কারিগরী বিনির্দেশ প্রস্তুত করেছেন। বুয়েট তাদের সমীক্ষা রিপোর্টে প্রদান করেছেন ০৩ এপ্রিল ২০২১ সালে।
পরবর্তীতে যখন পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায় কয়েকটা বিষয়ের ব্যাখ্যা বুয়েট এর কাছে চাওয়া হলে বুয়েট ০৯.১০.২০২১ সালে বিটিসিএল বরাবর একটি লিখিত ব্যাখ্যা পাঠায়; সেখানে বুয়েট উল্লেখ করে যে, ডিপিপি প্রণয়নের প্রাক্কালে বুয়েট সার্ভে করার সময় বিটিসিএল এর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিটিসিএল এর ব্যান্ডউইথ এর বর্তমান চাহিদা এবং গত কয়েক বছর কিভাবে এই চাহিদা বেড়েছে এ সম্পর্কে বিটিসিএল এর কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছিল।
তাই এক্ষেত্রে প্রাপ্ত চাহিদা ও ঐ এলাকার প্রকৃত চাহিদার মধ্যে পার্থক্য থাকায় দরপত্র প্রস্তুতের পূর্বে পরামর্শকদের মাধ্যমে সার্ভে করলে সঠিক চাহিদা নিরুপণ করা যেত এবং ২০৩০ সালের জন্য যুগোপযোগী ত্রুটিহীন ইকুইপমেন্ট কেনা সম্ভব হতো।
এখানে উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই বিটিসিএল কর্তৃক সারাদেশেনিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদানের জন্য অপটিক্যাল ফাইবারলাইন বসানো হয়েছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান ইন্টারনেটের চাহিদাপূরণে আমাদের বর্তমান অবকাঠামো যথেষ্ট নয়।
তাই সরকার“৫জি’র উপযোগী করণে অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক” নামক প্রকল্প হাতে নেয়, যার আওতায় ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের ইন্টারনেট চাহিদা মেটানোর উপযোগীঅবকাঠামো তৈরী করা হবে।
বুয়েট কর্তৃক বিটিসিএলে প্রদত্ত ০৯.১০.২০২১ সালের রিপোর্টের ৪র্থ পাতায় ২০২১ সাল পর্যন্ত বিটিসিএলের ট্রান্সমিশন ক্যাপাসিটি ৭৭০ জিবিপিএস। তখন বিটিসিএল যে ডিডাব্লিউডিএম ক্রয় করে তা ছিল ঈঊ ব্যান্ডের ও তা কেনা হয় ২০১৫ সালে এবং বিবেচনায় ছিল থ্রী জি।
আবার বুয়েট এর একই রিপোর্টে আছে ২০৩০ সালে বিটিসিএলের ট্রান্সমিশন ক্যাপাসিটি লাগবে ৫৩৭০ জিবিপিএস এর। যদিও বিটিআরসির গত ১ আগস্ট ২০২২ তারিখের প্রক্ষেপণ পত্র মোতাবেক বিটিসিএল এর ট্রান্সমিশন ক্যাপাসিটি লাগবে ৯০০০ জিবিপিএস এর।
আর বর্তমানে বিবেচনায় নিতে হবে ৫জি। তাহলে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ব্যবহার করে ঈঊ++ বা ঝঁঢ়বৎ ঈঊ এবং আমাদের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির কারণে ও বর্তমান ইকুইপমেন্ট ঈ ব্যান্ড এর সে ক্যাপাসিটি সার্ভিস না দেওয়ার কারণেই নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পুনরায় আবার একই ব্যান্ডের ইকুইপমেন্ট ক্রয় করলে এখানে রাষ্ট্রের টাকার অপচয় হবে এবং প্রকল্প আর তখন দেশের সামাজিক অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সারাদেশ তো দূরের কথা; ঢাকার গুলশানেও তখন ২০৩০ সালে এইসব পুরানো প্রযুক্তি দিয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে না।