সব বয়সীরাই হাঁটুব্যথায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে সাধারণত ৪০ এর পর অধিকাংশ মানুষের এই সমস্যা দেখা দেয়। আঘাত, আর্থ্রাইটিস বা হাড়ক্ষয়- যেকোন কারণে হাঁটুব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে নারীদের মনোপজের পরে হাঁটুব্যথা হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। আবার হাড়ক্ষয়ের সমস্যা নারীদেরই বেশি হয়।
হাঁটুব্যথার হলে সঠিক চিকিৎসা, ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা দরকার। আসুন জেনে নেই, হাঁটুব্যথা কমাতে করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে-
সঠিক খাদ্যাভ্যাস
প্রতিটি মানুষের সুস্থ থাকার জন্য দরকার সুষম খাবার খাওয়া। দেহে পুষ্টির চাহিদা ঠিক থাকলে অসুখ-বিসুখ কম হয়, রক্ত চলাচল প্রক্রিয়াও স্বাভাবিক থাকে। পর্যাপ্ত পরিমাণে শাক-সবজি ও ফলমূল খেতে হবে। প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন দুধ, ডিম, মাংস, বাদাম, দই খেতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওজন শরীর বহন করতে পারে না। হাঁটুর ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। ফলে হাঁটুতে ব্যথা হয়। এজন্য বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ধ্যান বা মেডিটেশন
ক্রনিক বা দীর্ঘদিনের ব্যথা সহজে ভালো হয় না। এক্ষেত্রে দরকার বিশেষ যত্নের। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন করলে হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা কমে যায়। তখন হাঁটাহাঁটি করলেও ব্যথা কম অনুভূত হয়।
প্রতিদিন একই সময়ে ধ্যান করতে হবে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী মেডিটেশনের সময় নির্ধারণ করুন। তা হতে পারে ১০ থেকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। মেডিটেশন করলে মনও ভালো থাকে।
ম্যাসাজ
ম্যাসাজ করলে মস্তিষ্ক থেকে ‘সেরোটোনিন’ হরমোন নিঃসরণ হয়। এই হরমোন মুড ভালো রাখে। ফলে কিছুটা আরামবোধ হয়। সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন ১৫ মিনিট ধরে মাসাজ করা যেতে পারে। তবে মাসাজের সময় পেশীতে বেশি চাপ দেয়া যাবে না। ম্যাসাজ হবে হালকা বা মৃদু ধরনের।
ভিটামিন-ডি গ্রহণ
সামুদ্রিক মাছ, ছোট মাছ, মাশরুম, ডিম, কলিজা, অ্যাভোকাডো ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার। এগুলো খেতে হবে নিয়মিত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ডি অত্যন্ত কার্যকর। শরীরে ভিটামিন ডি এর মাত্রা ঠিক রাখতে সকালবেলা অন্তত ১০ মিনিট রোদে গা লাগাতে পারেন।
উপকারী আদা
হাঁটু ও জয়েন্টে ব্যথা দূর করতে আদা বেশ কার্যকর। আর্থ্রাইটিসের ব্যথা দূর করতে আপনার খাবারে যোগ করুন আদা। খালি মুখেও কিছুটা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে খাবার হজম ভালো হবে। প্রতিদিন ১/৪ চা চামচ আদা খাওয়া ভালো।
হাঁটুব্যথার কারণ নানারকম হতে পারে। সমস্যা অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারিত হয়। হাঁটুব্যথার কারণ নির্ণয় করতে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ডি জাতীয় ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না।